নুরুল আমিন হেলালী

ঈদুল আযহার নির্ধারিত ছুটি শেষে অফিস আদালত খুললেও পর্যটন নগরী কক্সবাজারের বিনোদন স্পটগুলোতে এখনও কাটেনি ঈদের আমেজ। এখনও ভ্রমন পিয়াসী মানুষের পদচারণায় মূখরিত পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলো। ফলে খোশ মেজাজে রয়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। চাঙ্গা রয়েছে কক্সবাজারের অর্থনীতি। শহরের অভ্যন্তরিণ সড়ক-উপসড়কে চলছে রিক্সা, টমটম ও সিএনজি ট্যাক্সির দাপট।

তবে দেখা গেছে, ফিরতি যাত্রী বাড়তে থাকায় বাসষ্টেশন ও বিমান বন্দরে যাত্রীদের ভীড় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। মেঘের কোলে রোদ হেসেছে বাদল গেছে টুটি, আজ আমাদের ছুটি ও ভাই আজ আমাদের ছুটি। কবি গুরুর কবিতার লাইনগুলোর মতোই যেন মেঘ-রোদ্দুরের এই লুকোচুরির বিকেল বেলা বাবা-মায়ের সঙ্গে হাত ধরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঘুরছিল আলিফ ও রামিসা নামের দুই ভাই-বোন। তাদের চোখে-মুখে ছিল খুশির ঝিলিক। তারা গাল ফোলানো হাসিতে জানায়, ঈদের ছুটির এই দিনগুলো তাদের ভালই কাটছে। কেননা যে কদিন তারা এইখানে আছে নেই বাবা-মায়ের বকা-ঝকা, নেই চোখ রাঙানি, নেই পড়ার ঝামেলা। শুধুই আনন্দ আর আনন্দ। এখনও হাজারো পরিবার মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। তবে অনেক পর্যটকের অভিযোগ সৈকতে ভ্রাম্যমান মৌসুমী ব্যবসায়ীদের বিড়ম্বনায়ও তাদের পড়তে হচ্ছে।

চট্রগ্রামের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে স্ব-পরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পুলিশ কর্মকর্তা বশিরুল ইসলাম জানান, এখানে এসে দেখলাম ঈদের ছুটির আমেজ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। ভ্রমণ পিয়াসী মানুষের পদচারণায় পর্যটন শহরে এখনও বিরাজ করছে ঈদের আমেজ। এদিকে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, এবারে বিদেশী পর্যটক কম থাকলেও ঈদের পরদিন থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটকদের উপছে পড়া ভিড় ছিল কক্সবাজারের ইনানী, হিমছড়ি, ছেরাদ্বীপ, মহেশখালীর আদিনাত, রামুর বৌদ্ধমন্দ্বির, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, লাবণী সমুদ্র সৈকতসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের পর্যটন স্পটগুলো এখনও পর্যটকদের পদচারণায় মূখরিত। এদিকে কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের কয়েক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সুন্দর আবহাওয়া বিরাজমান থাকায় এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় এবার ঈদুর আযহা পরবর্তী পর্যটকের ঢল নেমেছে। জমে উঠেছে ব্যবসা বাণিজ্য। ব্যবসায়ীরাও মন্দা কাটিয়ে আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে।

অন্যদিকে আতিক, বক্কর, সোনিয়াসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দ্বা জানান, পর্যটন মৌসুম আসলেই শহরের অভ্যন্তরীণ সড়কে চলাচলকারী গণপরিবহন গুলোতে চলে ভাড়ার নামে যাত্রীদের পকেট কাটা বাণিজ্য। এসব পরিবহনের অনৈতিক ভাড়া বাণিজ্যের কারণে ঘর থেকে বের হওয়া দায় হয়ে পড়েছে। যেন দেখার কেউ নেই। পৌরসভার নির্ধারিত ভাড়া তালিকা থাকলেও পর্যটক আসার সাথে সাথে তা কেউ মানছে না। যে যেভাবে পারছে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে নিচ্ছে। এনিয়ে চালক ও যাত্রীদের মাঝে চলছে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা।

অপরদিকে সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ট্যুরিস্ট পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, শহরে পর্যটকদের জন্য চব্বিশ ঘন্টা নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন।